শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৪৪ পূর্বাহ্ন

২৯ বছর পর সালমান শাহর ‘ইস্কাটন প্লাজার’ ফ্ল্যাটের ভিডিও প্রকাশ

অভিনয়, সহজাত আবেগ ও পর্দায় রোমান্টিক অনুভূতির জন্য তিনি আজও ভক্তদের মনে অমর। চলচ্চিত্রে সমান জনপ্রিয়তা ধরে রাখা, নতুন ধারা সৃষ্টি করা—সব মিলিয়ে সালমান শাহ ছিলেন এক যুগান্তকারী নায়ক, যার স্মৃতি এখনো দর্শক ও সহকর্মীদের অন্তরে জীবন্ত। মাত্র চার বছরের অভিনয়জীবনে ঢালিউডে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিলেন সালমান শাহ।

অমর নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর পর আজও ভুলতে পারেননি ভক্তরা। সেই সাথে তার স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন প্রিয়জনেরা। বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহের রহস্যজনক মৃত্যুর প্রায় তিন দশক পর নতুন মোড় নিলো ঘটনাটি। আদালতের নির্দেশে অপমৃত্যু মামলাটি এবার হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।

অপমৃত্যু মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণের পর এর তদন্তে নেমেছে রমনা থানা পুলিশ। সেই তদন্তের জের ধরে সালমান শাহ ২৯ বছর আগে যে বাসাটিতে বসবাস করতেন সেখানে তদন্তের জন্য আসে পুলিশ।

রাজধানীর ‘ইস্কাটন প্লাজার’ ফ্ল্যাটের ভেতরের চিত্র কেমন তা ঘুরে ঘুরে দেখেছে পুলিশ। তবে নায়কের মৃত্যুর পর সিলগালা করে দেয়া হয়েছিল ফ্ল্যাটটি। বর্তমানে ফ্ল্যাটের মালিক সেখানে বসবাস করছেন। নব্বই দশকে এই বাসাটিতেই স্ত্রী সামিরাকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন স্বপ্নের নায়ক সালমান শাহ।

গত সোমবার (২০ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি করেন সালমান শাহের মামা আলমগীর কুমকুম।

মামলায় সালমান শাহের স্ত্রী সামিরা হককে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়াও অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুসি, চলচ্চিত্রের খলনায়ক ডনসহ মোট ১১ জন। এজাহারে আরও কয়েকজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামও উল্লেখ করা হয়েছে।

সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যু মামলার পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেন এবং এটিকে হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করার আদেশ দেন। আদালতের এই আদেশের পরই সালমান শাহের মামা আলমগীর কুমকুম ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই রমনা থানায় হত্যা মামলাটি করেন। আদালত রমনা মডেল থানা পুলিশকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলা দায়েরের পর বাদীপক্ষের আইনজীবী ও স্বজনরা জানান, তারা দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে আসছিলেন। পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন বলে মত দিলেও, তার পরিবার তা মানতে নারাজ ছিলেন।

সালমান শাহের মামা আলমগীর কুমকুম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সালমান শাহর বাবা একজন ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। উনি অনেক চেষ্টা করেছেন অপমৃত্যুকে হত্যা মামলায় রূপান্তর করতে। চেষ্টা করতে করতে উনিও দুনিয়া থেকে চলে গেলেন। এখন এতদিন পর এটা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ প্রমাণ হবে এটা হত্যা।’

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সালমান শাহের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার অকালমৃত্যু নিয়ে তৈরি হওয়া রহস্যের জট এবার হত্যা মামলার তদন্তের মাধ্যমে খুলবে কি না, সেদিকেই তাকিয়ে আছে পুরো দেশবাসী।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved Meherpur Sangbad © 2025